বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মচারী পদে দুর্নীতির অভিযোগে ৩ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় এ নিয়োগ বাতিল করা হয়। বাতিলের বিষয় নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমান সজল।
জানা যায়, সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে গত ১ এপ্রিল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্র শেখর দাস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহিম, সভাপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমান সজল, প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরীক্ষায় অফিস সহায়ক পদে ৫জন, নিরাপত্তা কর্মী পদে ৪জন এবং আয়া পদে ৩জন অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষার পর দেখা যায়, আপন ভাই-বোন জাহিদ বিশ্বাস নিরাপত্তা কর্মী এবং মিতু বিশ্বাস আয়া পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের বাচ্চু বিশ্বাসের ছেলে মেয়ে। অফিস সহায়ক পদে একই ইউনিয়নের বান্দুকগ্রামের নবাব নিয়োগ পান।
সভাপতিকে পাশ কাটিয়ে অন্যদের ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে
সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমান সজল বলেন, আমাকে পাশ কাটিয়ে প্রধান শিক্ষক ডিজির প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ সম্পন্ন করেন। পরে আমাকে স্বাক্ষর করতে বললে আমি স্বাক্ষর না করে ম্যানেজিং কমিটির সভা ডাকতে বলি। ইতিমধ্যে স্বাক্ষর করার জন্য অনুরোধ এবং বিভিন্ন লোক দিয়ে সুপারিশ করায় প্রধান শিক্ষক।
মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভায় নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দুই পদে যেহেতু আপন ভাই বোন এবং অফিস সহায়ক পদে যে নিয়োগ পেয়েছে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়না ইউনিয়নের হাটখোলারচর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী চৌধুরী অবশ্য সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ডিজির প্রতিনিধি, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সভাপতি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন।
আমি কোন প্রশ্ন করিনি। সম্পুর্ন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। সভাপতি কেন নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তা আমি জানিনা। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহি বলেন, নিয়োগ নিয়ে আমাকে ফোন করবেন না। যা জানার প্রধান শিক্ষককের নিকট থেকে জানেন।
ডিজির প্রতিনিধি ফরিদপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্র শেখর দাস বলেন, নিয়োগ বোর্ডে আমি, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক মিলে প্রশ্ন করেছি।
পরীক্ষায় যারা প্রথম হয়েছে আমরা তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছি। তবে ফলাফল প্রকাশের পরই সভাপতি একটু দ্বিমত পোষন করছিলেন। আমি তাদের বলেছি স্কুল চালাবেন আপনারা। যাদেরকে নিলে স্কুল ভাল চলে আপনার তাদের নিয়োগ দিবেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।